ঢাকা ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বেতন এর ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে মাঠ কর্মী

Mohammad Abulllha Wahed
  • আপডেট সময় : ০৭:৫১:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১২৭ বার পড়া হয়েছে

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বেতন

সম্প্রতি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে একটি বড় ধরনের কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে, যেখানে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের এর ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে মাঠ কর্মী। সাধারণত পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাঠ কর্মীদের গড় বেতন ১৫,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে হলেও, এমন বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাত দেশের মানুষের মধ্যে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনা গ্রাহক, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ পুরো দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক জালিয়াতি সংক্রান্ত এমন অঘটন সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কীভাবে ঘটলো এই ১০ কোটি টাকার জালিয়াতি?

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ের ওই কর্মী দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের টাকা তোলার দায়িত্বে ছিল। ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ দুর্বলতার সুযোগে তিনি কৌশলে বিশাল অঙ্কের টাকা নিজের নামে উঠিয়ে নিয়েছিলেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, গ্রাহকদের সঞ্চয় তোলার ফাঁকে নিজস্ব একাধিক ভুয়া হিসাব খুলে সেখানে টাকা স্থানান্তর করেন। কোনো রকম তদারকি না থাকায় তার এই প্রতারণা ধরা পড়তে দেরি হয়। এভাবেই মাঠ কর্মী টাকা আত্মসাৎ করে পরিকল্পিতভাবে ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রতিক্রিয়া

ঘটনার পরপরই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা জরুরি বৈঠক ডাকেন। ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বলেছেন, অভিযুক্ত মাঠ কর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতারণা সংক্রান্ত নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে।

মাঠ কর্মীর পরিচয় ও পলায়ন পরিকল্পনা

তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া কর্মীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে এবং তার গতিবিধি শনাক্তের চেষ্টা চলছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার ফলেই সে এত বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে সহজে পালাতে পেরেছে। সে দেশ ত্যাগ করার চেষ্টা করছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পদক্ষেপ

এই ঘটনার পর পুলিশ ও র‍্যাব একযোগে অভিযান শুরু করেছে। র‍্যাব অভিযান ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালানো হয়েছে।প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়ার কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। এছাড়া, অভিযুক্তের সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গ্রাহক ও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

ব্যাংকের এই বড় ধরনের দুর্নীতির কারণে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে ভীষণ ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকে নিজেদের সঞ্চিত অর্থ ফেরত পাবেন কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।একজন গ্রাহক বলেছেন, আমাদের কষ্টের টাকায় যারা হাত দেয়, তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। এ ধরনের ব্যাংক গ্রাহকদের ক্ষোভ দিন দিন আরও বাড়ছে।

বাংলাদেশে ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা

বাংলাদেশে ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা নতুন কিছু নয়। পূর্বেও বিভিন্ন ব্যাংকে বড় ধরনের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।তবে এইবারের মতো এক মাঠ কর্মীর মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া বিরল ঘটনা। এটি আবারো প্রমাণ করে, ব্যাংক নিরাপত্তা দুর্বলতা এখনো দূর হয়নি।

আগামীর করণীয় কীভাবে প্রতারণা ঠেকানো যাবে?

ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় কঠোর পরিবর্তন আনা জরুরি।

• প্রথমত, প্রত্যেক কর্মীর কার্যক্রম কঠোরভাবে তদারকি করতে হবে।

• দ্বিতীয়ত, আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ট্রানজেকশন মনিটরিং আরও উন্নত করতে হবে।

• তৃতীয়ত, নিয়মিত অডিট ও চেকিংয়ের ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন।

এছাড়া, গ্রাহকদের সাথেও খোলামেলা যোগাযোগ রক্ষা করা উচিত যাতে তারা যেকোনো সন্দেহজনক লেনদেন দ্রুত জানাতে পারেন।

শেষ কথা 

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বেতন এর ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে মাঠ কর্মী। এই ঘটনাটি দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কেড়ে নিচ্ছে। এখনই যদি দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও বড় ক্ষতি হতে পারে। দেশবাসী এখন চাইছে কঠোর বিচার এবং নিরাপদ ব্যাংকিং ব্যবস্থা।

বর্তমানে ল্যাব এসিস্ট্যান্ট নিয়োগের যোগ্যতা। বিস্তারিত জানতে এখানে যান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বাংলাদেশের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বেতন এর ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে মাঠ কর্মী

আপডেট সময় : ০৭:৫১:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

সম্প্রতি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে একটি বড় ধরনের কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে, যেখানে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের এর ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে মাঠ কর্মী। সাধারণত পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাঠ কর্মীদের গড় বেতন ১৫,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে হলেও, এমন বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাত দেশের মানুষের মধ্যে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনা গ্রাহক, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ পুরো দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক জালিয়াতি সংক্রান্ত এমন অঘটন সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কীভাবে ঘটলো এই ১০ কোটি টাকার জালিয়াতি?

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ের ওই কর্মী দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের টাকা তোলার দায়িত্বে ছিল। ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ দুর্বলতার সুযোগে তিনি কৌশলে বিশাল অঙ্কের টাকা নিজের নামে উঠিয়ে নিয়েছিলেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, গ্রাহকদের সঞ্চয় তোলার ফাঁকে নিজস্ব একাধিক ভুয়া হিসাব খুলে সেখানে টাকা স্থানান্তর করেন। কোনো রকম তদারকি না থাকায় তার এই প্রতারণা ধরা পড়তে দেরি হয়। এভাবেই মাঠ কর্মী টাকা আত্মসাৎ করে পরিকল্পিতভাবে ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রতিক্রিয়া

ঘটনার পরপরই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা জরুরি বৈঠক ডাকেন। ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বলেছেন, অভিযুক্ত মাঠ কর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতারণা সংক্রান্ত নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে।

মাঠ কর্মীর পরিচয় ও পলায়ন পরিকল্পনা

তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া কর্মীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে এবং তার গতিবিধি শনাক্তের চেষ্টা চলছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার ফলেই সে এত বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে সহজে পালাতে পেরেছে। সে দেশ ত্যাগ করার চেষ্টা করছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পদক্ষেপ

এই ঘটনার পর পুলিশ ও র‍্যাব একযোগে অভিযান শুরু করেছে। র‍্যাব অভিযান ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালানো হয়েছে।প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়ার কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। এছাড়া, অভিযুক্তের সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গ্রাহক ও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

ব্যাংকের এই বড় ধরনের দুর্নীতির কারণে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে ভীষণ ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকে নিজেদের সঞ্চিত অর্থ ফেরত পাবেন কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।একজন গ্রাহক বলেছেন, আমাদের কষ্টের টাকায় যারা হাত দেয়, তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। এ ধরনের ব্যাংক গ্রাহকদের ক্ষোভ দিন দিন আরও বাড়ছে।

বাংলাদেশে ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা

বাংলাদেশে ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা নতুন কিছু নয়। পূর্বেও বিভিন্ন ব্যাংকে বড় ধরনের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।তবে এইবারের মতো এক মাঠ কর্মীর মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া বিরল ঘটনা। এটি আবারো প্রমাণ করে, ব্যাংক নিরাপত্তা দুর্বলতা এখনো দূর হয়নি।

আগামীর করণীয় কীভাবে প্রতারণা ঠেকানো যাবে?

ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় কঠোর পরিবর্তন আনা জরুরি।

• প্রথমত, প্রত্যেক কর্মীর কার্যক্রম কঠোরভাবে তদারকি করতে হবে।

• দ্বিতীয়ত, আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ট্রানজেকশন মনিটরিং আরও উন্নত করতে হবে।

• তৃতীয়ত, নিয়মিত অডিট ও চেকিংয়ের ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন।

এছাড়া, গ্রাহকদের সাথেও খোলামেলা যোগাযোগ রক্ষা করা উচিত যাতে তারা যেকোনো সন্দেহজনক লেনদেন দ্রুত জানাতে পারেন।

শেষ কথা 

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বেতন এর ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে মাঠ কর্মী। এই ঘটনাটি দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কেড়ে নিচ্ছে। এখনই যদি দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও বড় ক্ষতি হতে পারে। দেশবাসী এখন চাইছে কঠোর বিচার এবং নিরাপদ ব্যাংকিং ব্যবস্থা।

বর্তমানে ল্যাব এসিস্ট্যান্ট নিয়োগের যোগ্যতা। বিস্তারিত জানতে এখানে যান।